এসএসসি পরীক্ষার জন্য নির্ধারণকতৃ অর্থের বেশী দেয়া থেকে বাঁচালেন ‘তথ্য উদ্যোগী মিজান’

২০১৮ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ কার্যক্রম শুরুর পূর্বে জনাব মিজান চিন্তা করেন এমন কিছু করতে হবে যার ফলে কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত ফি এর অধিক নিতে না পারেন। উপায় হিসেব তিনি ভেবে দেখেন তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী নির্ধারনকৃত ফি উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানে যে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে তার কপি চেয়ে আবেদন করা যায়। যেমন ভাবা তেমন কাজ। তিনি সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কষ্ণৃ নগর ইউনিয়নের কিষাণ মজদুর ইউনাইটেড একাডেমি উচ্চ বিদ্যালয়ে আবেদন করেন। তিনি বিদ্যালয়ে গিয়ে প্রথমে প্রধান শিক্ষকের কাছে চিঠিটি দেখতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বলেন,’ এরকম কোন চিঠি তার কাছে নেই এবং এ সংক্রান্ত কোন চিঠি তার কাছে আসেনি।’

মিজান তখন তাকে বললেন,’ আপনার কাছে চিঠি না থাকলে দিতে হবে না। আর আপনি তথ্য না দিলেও আমার কোন আপত্তি নেই। কিন্তু আপনাকে তথ্য অধিকার আইন অনুযায়ী আমার লিখিত আবেদন ফরমটি নিতে হবে।’ প্রধান শিক্ষক মহোদয় তখন ক ফরমটি হাতে নিয়ে পড়তে শুরু করেন। পড়া শেষে তিনি টেবিলের উপর রেখে দেন। এরপর মিজান তাকে ঐ ফরমের রিসিভ কপি দিয়ে তাতে স্বাক্ষর করতে বললে তিনি রাজি হননি। বরং মিজানের কাছে জানতে চাইলেন স্বাক্ষর করলে তার কোন ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে কীনা। তখন মিজান তাকে বলেন, ‘স্যার আপনি স্বাক্ষর করেন কোন সমস্যা হবে না। আপনার জন্য ২০ কার্যদিবস সময় থাকছে। এই সময়ের মধ্যে তথ্য না দিলে অথবা সঠিক তথ্য গোপন করলে আইন অনুযায়ী আমি আপীল করবো। তারপরও সমাধান না হলে আপনাকে ঢাকায় তথ্য কমিশনে শুনানীতে অংশগ্রহণ করতে হবে। তারা যে রায় দিবে তাই আপনাকে মানতে হবে। শাস্তির ব্যবস্থার কথাও উল্লেখ আছে ঐ আইনে। আজকের দিন থেকে হিসাব করে জরিমানা নির্ধারন করবেন এবং আমার যাতায়াতসহ অন্যান্য খরচও আপনাকেই দিতে হবে।’ এই কথা বলে জাহিদ প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরকৃত আবেদন ফরমটি নিয়ে বিদ্যালয় প্রঙ্গন থেকে ফিরে আসেন। ঐদিন থেকে তিনদিন পরে প্রধান শিক্ষক মহোদয় তার সাথে ফোনে যোগাযোগ করেন এবং তাকে চাহিত তথ্য নেয়ার অনুরোধ করেন। মিজান তথ্য সংগ্রহ করে বিদ্যালয়ের বেশকিছু ছাত্র-ছাত্রীকে জানিয়ে দেন যে তাদের ফরম ফিলাপের জন্য নির্ধারণকতৃ অর্থের পরিমান ১০৫০ টাকা। এর চেয়ে বশী নেয়ার কোন সুযাগ কর্তৃপক্ষের নেই। সেই সাথে তাদের অভিভাকদের এই চিঠির কপি তার কাছ থেকে সংগ্রহ করার জন্য পরামর্শ দেন যাতে ফরমফিলাপের সময় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এর বেশী অর্থ দাবী করলে প্রমাণ হিসেবে চিঠিটি তারা দেখাতে পারেন। এরপর অনেক অভিভাবক তার কাছ থেকে চিঠির কপি সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে অভিভাবকগণ মিজানকে জানান যে, এই চিঠির কারণে অধিক অর্থ দাবী করতে পারেননি বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে তাদের খুশিমনে যা দিবেন তাই তারা নেবেন বলে অভিভাকদের কিছু বাড়তি অর্থ প্রদানের অনুরোধ করেছিলেন।