নারীর ক্ষমতায়ন

দি হাঙ্গার প্রজেক্ট গভীরভাবে বিশ্বাস করে, ‘নারীরাই ক্ষুধামুক্তির মূল চাবিকাঠি’। বিদ্যমান জেন্ডার অসমতা ও বৈষম্য ক্ষুধামুক্ত ও আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে অন্যতম অন্তরায়। নারীকে অবদমিত রেখে টেকসই উন্নয়ন অর্জন সম্ভব নয়। বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেও দেখা যায়, নারীদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হলে জন্মশাসন অধিকতর সফল হয়। আর্থিক কর্মকাণ্ডে নারী পুরুষের চাইতে অনেক বেশি সৃজনশীল ও দায়িত্ববান। নারী শিক্ষার হার বাড়লে সমাজে সামগ্রিক শিক্ষার হার বৃদ্ধি পায় এবং পরিবারে চিকিৎসা ব্যয় ও অপরাধ প্রবণতা কমে আসে। নারীরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হলে জেন্ডারবান্ধব আইন ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা সম্ভব হয়।

তাই দি হাঙ্গার প্রজেক্ট নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সারাদেশে তৃণমূল পর্যায়ের একদল নারীকে সংগঠিত, ক্ষমতায়িত ও তাদের সামর্থ্য বিকাশের লক্ষ্যে নিবিড় ও ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ-কর্মশালা পরিচালনা করে আসছে। প্রশিক্ষণের প্রথম ধাপ এবং ভিত্তি হলো ‘নারী নেতৃত্ব বিকাশ’ শীর্ষক ফাউন্ডেশন কোর্স। বর্তমানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দশ হাজার নারীনেত্রী স্থানীয় পর্যায়ে বাল্যবিবাহ, যৌতুক, পারিবারিক নির্যাতন ও যৌন হয়রানিসহ নারীর প্রতি সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারাভিযান পরিচালনা করছেন এবং প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন। তারা অনেকেই যুক্ত হচ্ছেন সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায়। উল্লেখ্য, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এই নারীনেত্রীরা গড়ে তুলছেন ‘বিকশিত নারী নেটওয়ার্ক’।

এছাড়া দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর উদ্যোগে গড়ে ওঠা ‘জাতীয় কন্যাশিশু এডভোকোসি ফোরাম’ কন্যাশিশু ও নারীদের অবস্থা ও অবস্থানের ইতিবাচক পরিবর্তনে কাজ করছে। এটি মূলত বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিবর্গের কাজের সমন্বয় এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের একটি শক্তিশালী প্লাটফর্ম। কন্যাশিশুর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গণসচেতনতা সৃষ্টি ও নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে অ্যাডভোকেসির জন্য এই ফোরাম-এর উদ্যোগে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।