‘ভারত-বাংলাদেশ দু দেশেরই আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন দরকার। স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এবং এই ব্যবস্থায় প্রয়োজনীয় সংস্কার আনার মাধ্যমে আমরা এই উন্নয়ন সাধন করতে পারি’ বলে মন্তব্য করেছেন ভারতের প্রাক্তন কূটনীতিক, লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্য ও প্রাক্তন মন্ত্রী (পঞ্চায়েতরাজ মন্ত্রণালয়) শ্রী মনি শঙ্কর আয়ার। তিনি ০৭ ডিসেম্বর ২০১৬ স্পেকট্রা কনভেনশন সেন্টার, গুলশান-এ ‘দি হাঙ্গার প্রজেক্ট’ ও ‘সুজন-সুশাসনের জন্য নাগরিক’-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক পাবলিক লেকচারে এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, বিগত ৪৫ বছরে বাংলাদেশ স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে যে অগ্রগতি সাধন করেছে, ভারত তার স্বাধীনতার প্রথম ৪৫ বছরে এতটা অগ্রগতি সাধন করতে পারেনি।’
সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খানের সভাপতিত্বে ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এই পাবলিক লেকচারে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল মতিন পাটেয়ারী এবং স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ প্রমুখ।
মনি শঙ্কর আয়ার বলেন, ‘নারীরা সমাজের অর্ধেক জনগোষ্ঠী। তাদের পেছনে রেখে আমরা কোনো উন্নয়ন সাধন করতে পারবো না। ভারতে আমরা দেখি, কোটা পদ্ধতির কারণে স্থানীয় সরকারে নারীদের প্রতিনিধিত্ব বেড়েছে। যেমন, ভারতের পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় প্রায় এক লাখ নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধি রয়েছেন। কর্নাটকে ৩০টি জেলা পরিষদের মধ্যে ১৫টিতেই চেয়ারপার্সন হিসেবে নারীরা আসীন রয়েছেন।’ অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ ছাড়া অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জনাব আয়ার স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘মানবিক সম্পর্কের জায়গা থেকেই বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের যাত্রা শুরু হয়। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারত প্রায় এক কোটি শরনার্থীকে আশ্রয় দিয়েছিল।’
দি হাঙ্গার প্রজেক্ট সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ভারতের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট অসাধারণ কাজ করছে। আমার বিশ্বাস, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশেও সংস্থাটি ভাল করছে।’
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘মনি শঙ্কর আয়ার একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ, কূটনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশের একজন বন্ধু। বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে আমরা তাকে স্বাগত জানাই।’ ড. মজুমদার তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বাংলাদেশে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট স্বেচ্ছাব্রতীদের নিয়ে স্থানীয় সরকারের সাথে যৌথ অংশীদারিত্বে এসডিজি ইউনিয়ন গড়ে তোলার চেষ্টা করছে।’ এর মাধ্যমে স্থানীয় সরকার শক্তিশালী হওয়ার পাশাপাশি হওয়ার পাশাপাশি কিছু মডেল ইউনিয়ন তৈরি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।