পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা

স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর দ্বিতীয় তফসিলে ইউনিয়ন পরিষদের কার্যাবলী বর্ণিত হয়েছে। বর্ণিত ৩৮টি কার্যাবলীর প্রথমটিই হচ্ছে ‘পাঁচশালা ও বিভিন্ন মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি’। সেই দিক থেকে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ইউনিয়ন পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ কার্যাবলীর মধ্যে অন্যতম।

জনঅংশগ্রহণমূলক পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা কী:
উন্নয়ন পরিকল্পনা বলতে মূলত জনঅংশগ্রহণমূলক পরিকল্পনাকেই বোঝায়। পরিকল্পনা হলো কর্মসূচির কাঙ্ক্ষিত সফলতার প্রতিচ্ছবি, যা বর্তমান ও ভবিষ্যত অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরি করে। পরিকল্পনার অন্যতম প্রধান বিষয়বস্তুগুলোর একটি হচ্ছে সম্পদের দক্ষ ব্যবহার এবং অপরটি জনগণের মালিকানা সৃষ্টি। আধুনিক যুগে অর্থনৈতিক নীতি বিশেষত জনগণের কাঙ্ক্ষিত স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা অতীত অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, দীর্ঘমেয়াদি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় উন্ন্য়ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়েছে বিচ্ছিন্নভাবে। ফলে এর সুফল পায়নি জনগণ। এ কারণেই স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ইউনিয়ন পরিষদের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ জনগণের চাহিদা অনুসারে এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সমন্বিত উপায়ে ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট, খাতভিত্তিক, দীর্ঘমেয়াদি পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়নের বিধান করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, ইউনিয়ন পরিষদ আইন, ২০০৯ এর ৪৭ ধারার (ঘ) উপধারায় পরিষদের এখতিয়ারভুক্ত যে কোনো বিষয়ে পরিষদের তহবিলের সঙ্গতি অনুযায়ী পাঁচশালা পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন মেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রস্তুত ও বাস্তবায়ন করার বিধান উল্লেখ রয়েছে।

উদ্দেশ্য:
জনগণের কাঙ্ক্ষিত স্থায়িত্বশীল উন্নয়নের জন্য দীর্ঘমেয়াদি সমন্বিত পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন অপরিহার্য। সেকারণে ইউপি আইন অনুসরণের মাধ্যমে জনঅংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়নে কারিগরি সহায়তা প্রদান করা।

প্রত্যাশিত ফলাফল:
পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বই আকারে প্রকাশ হবে;
ইউনিয়ন পরিষদের ভিশন জানা যাবে;
জনআকাক্সক্ষা ও জনচাহিদার চিত্র পাওয়া যাবে;
চাহিদা অনুযায়ী অগ্রাধিকার চিহ্নিত করা সম্ভব হবে;
ইউনিয়ন পরিষদের সম্পদ প্রবাহ ও বিভিন্ন খাতের অর্থ বরাদ্দের তথ্য পাওয়া যাবে;
ইউনিয়নের নিজস্ব আয়, সরকারি-বেসরকারি বরাদ্দের সাথে জনচাহিদা পূরণের সমন্বয় ঘটবে;
অবাধ তথ্যের প্রবাহ নিশ্চিত হবে;
কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে;
স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ ও মতামত প্রদান নিশ্চিত হবে;
পূর্ব থেকেই সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করে কাজ শুরু করা যাবে।
প্রসঙ্গত, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট তার কর্মভুক্ত এলাকাগুলোতে ইউনিয়ন পরিষদের পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা প্রণয়নে কারিগরি সহায়তা প্রদান করে থাকে।