এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন ঢেমুশিয়ার মহিমা জান্নাত

‘‘আমাকে নিয়া তোমরা এত ভাব কেন, আমি কি তোমাদের বোঝা? তোমরা আমাকে বাল্যবিয়ে দিতে চাও, আমাকে নিয়ে কি তোমাদের কোনো স্বপ্ন নেই?’’– বাবা-মায়ের উদ্দেশ্যে এই কথাগুলো বলছিলেন কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ঢেমুশিয়া ইউনিয়নের নয়াপাড়া গ্রামের মহিমা জান্নাত। তার বাবা আবুল কাশেম একজন দরিদ্র বর্গাচাষী। পারিবারিক অভাব-অনটনের মাঝেই এসএসসি পাশ করেন মহিমা জান্নাত। কলেজে ভর্তি হতে গেলেই বাবা-মার কাছ থেকে আসে বাধা। তারা জানিয়ে দেন, টাকা-পয়সা খরচ করে অত দূরে গিয়ে লেখাপড়ার দরকার নেই। এ অবস্থায় আয়-উপার্জনের একটি উপায় খুঁজতে থাকেন মহিমা।

২০১৫ সালে তৃণমূলের নারীদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির করার লক্ষ্যে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর উদ্যোগে ঢেমুশিয়া ইউনিয়নে ১৫ দিনব্যাপী সেলাই প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। স্থানীয় ২০ জন নারীর সাথে মহিমাও উক্ত প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। সেলাই প্রশিক্ষণটি গ্রহণ করে তার দৃঢ় ইচ্ছা হয় নিজ পরিবারে আয়ের অংশীদার হতে। যে ভাবনা সে কাজ। অনেক অনুরোধের পর তার বাবা তাকে একটি সেলাই মেশিন কিনে দেন। এরপর থেকে মহিমা কাপড় সেলাইয়ের কাজ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি সেলাইয়ের কাজ করে প্রতিমাসে গড়ে দেড় হাজার টাকা আয় করছেন। এ অর্থ দিয়ে তিনি তার পরিবার ও লেখাপড়ার খরচ যোগান দিচ্ছেন। এভাবে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর সহায়তায় এবং নিজের ঐকান্তিক ইচ্ছায় লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন মহিমা। মহিমা জান্নাতের ভবিষ্যত ইচ্ছা– একজন শিক্ষক হওয়া।