উজ্জীবক প্রশিক্ষণ

বাংলাদেশের ক্ষুধা-দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে ‘দি হাঙ্গার প্রজেক্ট’ একটি ব্যতিক্রমী স্বেচ্ছাব্রতী সামাজিক আন্দোলন। আন্দোলনটি পরিচালিত হচ্ছে একটি বিশ্বাসের ভিত্তিতে। বিশ্বাসটি হলো ‘মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। প্রতিটি মানুষ সক্ষম, সৃজনশীল এবং অফুরন্ত শক্তির আধার। মানুষের এই সক্ষমতা, সৃজনশীলতা আর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ক্ষুধা-দারিদ্র্য-সহ যে কোনো সমস্যাই সমাধান করা সম্ভব। আত্মপ্রত্যয়ী, সোচ্চার ও সংগঠিত একদল স্বেচ্ছাব্রতী এ আন্দোলনটির মূল চালিকাশক্তি। স্বেচ্ছাব্রতীদের একটি বড় অংশকে বলা হয় উজ্জীবক।’ স্বেচ্ছাব্রতী উজ্জীবকগণ নিজের ও সমাজের সার্বিক উন্নয়নের জন্য তৃণমূল পর্যায়ের মানুষকে উজ্জীবিত, অনুপ্রাণিত এবং সংগঠিত করছেন যাতে মানুষ তাদের নিজ সম্পদ, মেধা এবং সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়ে নিজেরাই নিজেদের ভাগ্যোন্নয়নের দায়িত্ব নিতে পারে। উজ্জীবকরাই এ সামাজিক আন্দোলনের অগ্রপথিক।

সংজ্ঞা: উজ্জীবক এমন একজন স্বেচ্ছাব্রতী মানুষ যিনি নিজ দায়িত্বে আপন ভাগ্য গড়েন এবং অন্যকে তার ভাগ্য গড়তে উজ্জীবিত ও অনুপ্রাণিত করেন। সমাজের বিভিন্ন স্তরের লোককে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে উজ্জীবক হিসেবে গড়ে তোলে। প্রক্রিয়াটির প্রথম ধাপে চার দিনব্যাপী যে প্রেষণামূলক প্রশিক্ষণ পরিচালনা করা হয় তাকেই উজ্জীবক প্রশিক্ষণ বলা হয়ে থাকে। উজ্জীবক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য: একদল আত্মপ্রত্যয়ী, আত্মশক্তিতে বলীয়ান, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ, সচেতন ও সোচ্চার মানুষ গড়ে তোলা, যারা স্বেচ্ছায় নিজ ভাগ্য গড়ার কারিগরে পরিণত হবে এবং অন্যকেও একই চেতনায় উদ্বুদ্ধ, সম্পৃক্ত ও সংগঠিত করবে। উজ্জীবক প্রশিক্ষণের কাঙ্ক্ষিত ফলাফল: (১) প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ একদল স্বেচ্ছাব্রতী তৈরি করা হবে; (২) মাঠ পর্যায়ে পরিচালিত ক্ষুধামুক্তির আন্দোলনে অনুঘটকসুলভ ভূমিকা চলমান থাকবে; (৩) ইউনিয়ন পরিষদের সামর্থ্য বিকাশ এবং এর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে সংগঠিত সামাজিক শক্তি সৃষ্টি হবে; (৪) নারীর প্রতি বঞ্চনা ও বৈষম্যমূলক সামাজিক কাঠামোর পরিবর্তনে স্থানীয় কার্যকর অনুঘটক সৃষ্টি হবে; (৫) প্রশিক্ষণ আয়োজন ও পরিচালনার মধ্য দিয়ে একদল দক্ষ ব্যবস্থাপক ও সহায়ক গড়ে উঠবে।