ইয়ূথ এন্ডিং হাঙ্গার

ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার-বাংলাদেশ একটি বিশ্বাস। একটি প্রতিশ্রুতি। বাংলাদেশের জন্য সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতে বিশ্বাসী একটি সামাজিক আন্দোলন। ক্ষুধামুক্ত আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ সৃষ্টির প্রত্যাশার ভিত্তিতে এ আন্দোলন পরিচালিত। ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার-বাংলাদেশ ১৯৯৫ সালে যাত্রা শুরু করার পর থেকে এখন তা বাংলাদেশে অন্যতম একটি স্বেচ্ছাব্রতী আন্দোলনে রূপ নিয়েছে।

ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাব্রতী সংস্থা দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর অনুপ্রেরণায় সৃষ্ট একটি ছাত্র সংগঠন। ছাত্র-ছাত্রীদের নেতৃত্বেই এ সংগঠন পরিচালিত। এ সংস্থার প্রতিটি সদস্য নিজের উন্নত ভবিষ্যৎ নিজে গড়তে এবং অন্যকে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার-এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:
(ক) ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা ও সৃজনশীলতার সর্বাধিক বিকাশের লক্ষ্যে তাদেরকে প্রণোদিত ও সংগঠিত করা;
(খ) ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সামাজিক দায়বদ্ধতা বোধ সৃষ্টি করে সমাজ সচেতন নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা;
(গ) ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের প্রত্যয় সৃষ্টি করা;
(ঘ) সংগঠনের প্রতিটি সদস্যকে সফল, স্বয়ংক্রিয় ও স্বেচ্ছাব্রতী নেতা হয়ে ওঠার লক্ষ্যে ক্ষমতায়িত করা; এবং
(ঙ) প্রত্যেককে আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক হয়ে উঠতে উৎসাহিত করা।

ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার-এর অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, ছাত্র-ছাত্রীরা পড়ালেখার পাশাপাশি তাদের অবসর সময়ে সমাজ গঠনের কাজে নিজেদের নিয়োজিত করবে এবং উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে, যার মাধ্যমে আমাদের সবার জন্য একটি সমৃদ্ধ ও মর্যাদাপূর্ণ ভবিষ্যত সৃষ্টি হবে।

ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার-এর কার্যক্রম:
বর্তমানে সারাদেশে এক লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রী ক্ষুধামুক্ত আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গঠনের প্রচেষ্টাকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করার কাজে যুক্ত। এ লক্ষ্যে তারা নানামুখী সৃজনশীল কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আর এই কাজের ভিত্তি হচ্ছে সামাজিক দায়বদ্ধতাবোধ। মূলত কর্মশালা ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে দায়বদ্ধতাবোধ সৃষ্টি করা হয়।

ক্ষুধামুক্তির গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনের একজন স্বয়ংক্রিয় ও স্বেচ্ছাব্রতী সৈনিক হিসেবে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষমতায়িত করতে ইয়ুথ লিডার্স প্রশিক্ষণ পরিচালিত হয়। যার মাধ্যমে তাদের মধ্যে একটি ক্ষুধামুক্ত ও আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ার সমন্বিত প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়। এ প্রত্যাশা অর্জনে নিবিষ্ট থাকতে তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয় এবং কিছু সুস্পষ্ট কার্যক্রম হাতে নেয়। উল্লেখ্য, ব্রিটিশ কাউন্সিল ও দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে ২০০৯ সাল থেকে ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার যুক্ত হয়েছে অ্যাকটিভ সিটিজেনস কর্মসূচিতে।

সামাজিক আন্দোলনকে বেগবান করতে ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার-এর সদস্যরা কিছু সুস্পষ্ট কার্যক্রম হাতে নেয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো ‘প্রত্যাশা, প্রতিশ্রুতি ও কার্যক্রম’ শীর্ষক কর্মশালা পরিচালনা। দেশব্যাপী পরিচালিত এ সকল কর্মশালার মাধ্যমে অন্যের মধ্যে সামাজিক দ্বায়বদ্ধতা বোধ সৃষ্টি হয়, সকলের মধ্যে আত্মনির্ভরশীলতা অর্জনের প্রত্যাশা জাগ্রত হয় এবং তারা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়। যার ভিত্তিতে নানামুখী কার্যক্রম গৃহীত হয় এবং পরিচালিত হয়। যেমন, যুব সংসদ, সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রচারাভিযান, গণিত উৎসব, পাঠাগার গঠন, পরিবেশ উন্নয়ন, বৃক্ষরোপণ, বিজ্ঞান ক্লাব, ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ক্লাব, শতভাগ স্যানিটেশন নিশ্চিতকরণ, নিরক্ষরতা ও আর্সেনিক দূরীকরণ, স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কার্যক্রম, নারী নির্যাতন, বাল্যবিবাহ ও যৌতুক প্রতিরোধ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও মাদক প্রতিরোধসহ ইত্যাদি। এছাড়াও ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন সৃজনশীল বিষয়ে প্রতিযোগিতা আয়োজন, জাতীয় কন্যাশিশু দিবস উদ্যাপন, নিরক্ষরতা দূরীকরণে কর্মসূচি গ্রহণ এবং আত্মকর্মসংস্থানমূলক উদ্যোগ ইত্যাদি গ্রহণ করা হয়।

যোগাযোগ: আমজাদ হোসেন রাজীব (amzad.hossain@thp.org)
ওয়েব: www.yeh.thpbd.org